আটকে যায়। তারপর আরো কিছু কথা হল যা
আটকে যায়। তারপর আরো কিছু কথা হল যা এখানে না উল্ল্যেখ করাই শ্রেয়। আসল কথোপকথনে চলে যাই।
আমি বললাম, আপনার সন্তান সন্ততি কয়টা? স্পষ্ট দেখতে পেলাম তার চোখ ছলছল করে উঠেছে। উনি বললেন, আমার দুইটা ছেলে। কোথায় থাকে ওরা? বাড়িতে ওদের নানীর সাথে থাকে। পড়াশোনা করে ওরা? চোখদুটো উনার আগ্রহে উজ্জ্বল হয়ে উঠল বুঝতে পারলাম। বড় ছেলেটারে মাদ্রাসায় দিছি। ছোটডারে সামনের বছর দিমু। বড় ছেলেটারে হাফেজ বানামু। দোয়া কইরেন। আমার মাথায় উনার এই শেষ উক্তিটি বাজতে থাকল, ছেলেটারে হাফেজ বানামু, ছেলেটারে হাফেজ বানামু।
আপনার ছেলে কি আপনার এই উপার্জনের টাকায় পড়াশোনা করে? হ, আমি এই ঢাকা শহরে থাইক্যা-খাইয়া যে টাকা বাচাইতে পারি, সবই মার কাছে দেই। উনিই আমার ছেলে দুইটারে দেখেন। আপনার ছেলেরা আপনারে কাছে থাকতে চায় না? হ, এইবার ঢাকা আসার আগের দিন, ছোট ছেলেটা আমারে বলে, মা। আমগোরে তোমার সাথে ঢাকা নিয়া যাও। আমারও মাঝে মাঝে মনডা চায়, ওগোরে ঢাকা আইন্যা ভাল জায়গায় পড়াই। কিন্তু সে তো অনেক টাকার ব্যাপার।
আপনার ছেলেরা হাফেজ হলেই আপনার স্বপ্নপুরণ হবে? হ,ছেলে হাফেজ হইলেই এইসব কাজ আর করমু না। ওরা কখনও জানবো না ওদের মা কত খারাপ। এবার উনি কেঁদে দিলেন। আমারও চোখও ভিজে উঠল। আমি আর ওখানে বসে থাকতে পারলাম না। উনার ছেলেকে দেওয়ার জন্যে কিছু টাকা দিয়ে উঠে পড়লাম। ততক্ষণে চাঁদ সগৌরবে তার উপস্থিতি জানান দিচ্ছে পৃথিবীকে।
উঠে যেতে যেতে ভাবছিলাম, বাংলাদেশে এটাই স্বাভাবিক। এখানে কেউ লালসার তাড়নায় বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়ে দিবে। অঢেল টাকা জমিয়ে রেখে কিয়ৎ অংশ ভোগ করে খালি হাতেই কবরে যাবে। আর কেউ নিজের পতি;তাবৃ;ত্তির টাকা দিয়ে ছেলেকে শিক্ষিত করার স্বপ্ন দেখবে।
ছেলেদুটিকে ভুলে গিয়ে বাবা ঠিকই চলে গিয়েছে, কিন্তু মা?
Comments
Post a Comment