আমাদের ভুল হয়ে গেছে। দয়া করে ক্ষমা করে দেন। দেশে আসতে চাই। – ওবায়েদুল কাদের

 আমাদের ভুল হয়ে গেছে। দয়া করে ক্ষমা করে দেন। দেশে আসতে চাই। – ওবায়েদুল কাদের



দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণ-অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের হদিস নেই। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী-এমপিসহ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের ব্যক্তিরা গা ঢাকা দেন। কেউ কেউ আশ্রয় নেন সেনা হেফাজতে। সম্প্রতি বিগত সরকারের প্রভাবশালী নীতিনির্ধারকদের কয়েকজন গ্রেফতার হলেও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কি সেনা হেফাজতে নাকি আত্মগোপনে রয়েছেন, সে বিষয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।


তবে আত্মগোপনে থাকা সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও দলীয় নেতারা যে যার মতো দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তাদের অধিকাংশের গন্তব্য প্রতিবেশী একটি দেশ। সেই দেশে তারা কেমন আছেন, কী করছেন এই ধরনের প্রশ্ন এখন ঘুরেফিরে আসছে সব মহলে। জানা গেছে, প্রবাসী নেতারাও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কারণ খুঁজছেন। তবে সব সময় একটি নামই উচ্চারিত হচ্ছে, তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সব ক্ষোভ তার ওপরই।


আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ৫ আগস্টের পর সাবেক মন্ত্রী-এমপি ও নেতাদের অনেকেই সীমান্ত পার হয়ে প্রতিবেশী একটি দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এই সংখ্যা কমপক্ষে ৩০০। তারা প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্থানে মিলিত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কারণ নিয়ে আলোচনা করছেন। নেতাদের এ আলোচনায় পারস্পরিক নিন্দা ও সমালোচনার পাশাপাশি দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের প্রসঙ্গ ঘুরে ফিরেই আসছে।


এসব নেতা মনে করেন, ওবায়দুল কাদেরের জন্য ডুবেছে আওয়ামী লীগ সরকার। তার দম্ভ-অহমিকাই দলের জন্য কাল হয়েছে। এদিকে পাসপোর্ট ও ভিসা থাকার পরও লন্ডন যেতে পারেননি আলোচিত সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশ ছাড়েন তিনি। আশ্রয় নেন প্রতিবেশী একটি দেশে। সেখান থেকে লন্ডন যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন নওফেল। কিন্তু ওই দেশটির বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন অফিসার তাকে ফেরত পাঠিয়েছেন।


ধারণা করা হচ্ছে, তার যুক্তরাজ্যের (ইউকে) ভিসা বাতিল হয়েছে। সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ছাত্রদের সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করে চরম সমালোচিত হন নওফেল। যেকোনোভাবে ছাত্রদের আন্দোলন দমনে তরুণ সাবেক এই মন্ত্রীর তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।


সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক তথ্য এবং সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের সঙ্গে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল তার সরকারকে রক্ষা করতে গিয়ে শেষ দিনগুলোতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন। সে কারণে সাবেক এই শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি ছাত্র-জনতার প্রচণ্ড ক্ষোভ রয়েছে।


অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের। ওই দিন পদত্যাগ করে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে চলে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি (শেখ হাসিনা) ভারত থেকে লন্ডন যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু যুক্তরাজ্য সরকার তাকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এমন খবর গণমাধ্যমে এসেছে। মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের ঘনিষ্ঠরা আশঙ্কা করছেন, একই ধরনের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে থাকতে পারেন তিনি।


এদিকে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শেখ হাসিনা ও তার সহযোগী সাবেক মন্ত্রী-এমপি এবং দলীয় নেতাদের যুক্তরাজ্য সরকার সে দেশে যেন আশ্রয় না দেয় লন্ডনে সেই প্রচার অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল লেবার পার্টির সংসদ সদস্য রুপা হকের একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য স্ট্যান্ডার্ড। ওই নিবন্ধে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সংসদ সদস্য রুপা হক মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া সরকারের সমীচীন হবে না।

Comments

Popular posts from this blog

একসঙ্গে ধেয়ে আসছে শক্তিশালী ৪ ঘূর্ণিঝড়, ৭৪ বছরের ইতিহাসে বিরল ঘটনা

সর্বকালের সব রেকর্ড ভাঙল স্বর্ণের দাম

নতুন উপদেষ্টা বিরুদ্ধে মশাল মিছিল!